,

নবীগঞ্জে বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নানান প্রতিশ্রুতি

মতিউর রহমান মুন্না ॥ দেশে সময় ঘনিয়ে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের। আইন অনুযায়ী আগামী বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের আগে ইউপি নির্বাচন শুরু করতে হবে, আর শেষ করতে হবে জুনের আগেই। বিগত ২০১৬ সালের ২২ মার্চ শুরু হয়ে কয়েক ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয় একই বছরের ৪ জুন। আইন অনুযায়ী কোনো ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এই হিসাব অনুযায়ী, আগামী বছরের মার্চে যেসব ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ বছর মেয়াদ হবে, সেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তাই এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে। আর যেসব ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ আগামী বছরের জুনের প্রথম দিকেই শেষ হবে, সেসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ করতে হবে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে। ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ ও নির্বাচন শুরুর সম্ভাব্য হিসাব করলে ভোটের এখনো প্রায় ৬ মাস বাকি থাকলেও এখন থেকেই তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও সদস্য (মেম্বার) প্রার্থীরা।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী হালচাল নিয়ে দৈনিক হবিগঞ্জ সময় ধারাবাহিক প্রতিবেদন এর ধারাবাহিকতায় নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের আজ তুলে ধরা হলো ১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়ন এর হালচাল।
প্রথমেই ইউনিয়ন পরিষদের পরিচিতি: হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় ভাটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়ন। ইউনিয়ন পরিষদ স্থাপনের সময় স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর কর্তৃক নবীগঞ্জ উপজেলায় বড় ভাকৈর নামে ১টি ইউনিয়ন গঠিত হয়। পরবর্তিতে ১৯৭৪ সালে তা বিভক্ত হয়ে ২টি ইউনিয়নে রূপ লাভ করে। একটি হচ্ছে বড় ভাকৈর পশ্চিম ইউনিয়ন এবং অন্যটি বড় ভাকৈর পূর্ব। এরপর থেকেই ওই ইউনিয়ন ১নং বড় ভাকৈর পশ্চিম নামে নামকরণ হয়। সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে আলাপকালে ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন চৌকি গ্রামের ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাশ। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন অধীর চন্দ্র মহালদার। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন মতিলাল দাশ। পরে ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৮ ও ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৩ এবং ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ৩ বার বিজয়ী হয়ে এক টানা ১৬ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন হলিমপুর গ্রামের মৃত- আল্লাদ চন্দ্র দাশ তালুকদারের ছেলে আশুতোষ দাশ তালুকদার। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন সত্যজিত দাশ। এরপর ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হয়ে দায়ীত্বপালন করেন সমর চন্দ্র দাশ। সবশেষ ২০১৬ সালে গেল নির্বাচনে ফের বিজয়ী হয়ে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করে আসছেন সত্যজিত দাশ। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সত্যজিৎ দাশ (চশমা) প্রতীকে (৩৩৭৩) ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমর চন্দ্র দাশ (নৌকা) প্রতীখ নিয়ে পান (২২৪১) ভোট।
১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নটি হাওর বেষ্টিত এলাকা। ইতিপূর্বে ওই ইউনিয়নে যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তবে বর্তমান সরকারের আমলে অনেকটা উন্নতি হয়েছে। অত্র ইউনিয়নে প্রায় ১৪ হাজারের মত ভোটার রয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রার্থী হবার আলোচনায় রয়েছেন ঃ বর্তমান দুই বারের ইউপি চেয়ারম্যান সত্যজিৎ দাশ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও ইউপি আওয়ামীলীগ সভাপতি এবং সাবেক চেয়ারম্যান সমর চন্দ্র দাশ, বিগত নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী স্মৃতি ভূষন চৌধুরী, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, নবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিলেট ল.কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক এড. শাহীদ আহমেদ তালুকদার, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গৌতম কুমার দাশ, তরুন সমাজ সেবক সাবেক ছাত্রনেতা বর্তমান ফ্রান্স প্রবাসী মোঃ আলিমুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি নেতা ভুলা দাশ, প্রবাসী রঙ্গলাল দাশ। তারা বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রার্থীতার কথা জানান দিচ্ছেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান সত্যজিৎ দাশ বলেন আমি আশাবাদী জনগণ আমাকে আবারোও বিপুলভোটে জয়ী করবে এবং বিজয়ী হলে আমার অসমাপ্ত কাজগুলি সমাপ্ত করতে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সাবেক চেয়ারম্যান সমর চন্দ্র দাশ বলেন, আগামীতেও তিনি নৌকার মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার সকল সমস্যা সমাধানে নিরলশভাবে কাজ করবেন। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এড. শাহিদ তালুকদার বলেন, দলীয়ভাবে যদি নির্বাচনে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত আসে। তাহলে তিনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। আলিমুল ইসলাম বলেন, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহন করার জন্য কিছু দিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন। তিনি অবহেলিত এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে চান।


     এই বিভাগের আরো খবর